বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশী ব্যাটারদের রাসেল-পোলার্ড হতে কে বলেছে?

জুবায়ের আহমেদ: টি২০ ব্যাটিং প্রসঙ্গে আমাদের অনেক ব্যাটারই টি২০ ক্রিকেটের ব্যাটিং স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে ক্যারিবিয়ান ব্যাটারদের দাঁড় করিয়ে বলতে শুনি যে, আমরা রাসেল-পোলার্ড নই বা তাদের মতো হতে পারবো না।

এই কথাটা শুধু বাংলাদেশের ব্যাটাররাই নয়, ম্যানেজমেন্ট থেকেও বলা হয়।

কিন্তু প্রশ্ন হলো বাংলাদেশী ব্যাটারদের রাসেল-পোলার্ড হতে কে বলেছে? কে বলেছে গেইল, লুইজ, রবম্যান পাওয়েল হতে? কেনো তারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে ক্যারিবিয়ান ব্যাটারদের টেনে আনেন টি২০ ব্যাটিং প্রসঙ্গে?

 

আদর্শ টি২০ ক্রিকেট কি শুধু ক্যারিবিয়ান ব্যাটাররা খেলে? অন্য কোন দেশের ক্রিকেটারটা কি খেলে না?

 

ক্যারিবিয়ানরা বেশ শক্তিশালী, আমাদের শক্তি নেই। টি২০ ক্রিকেটে কি শক্তিই শেষ কথা? ক্যারিবিয়ান ব্যাটারদের পাশাপাশি ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, আফ্রিকান, আইরিশদের কথাও না হয় বা দিলাম, কারন তাদের খাদ্যাভ্যাস আমাদের চেয়ে ভিন্ন।

 

কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশের দল ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, পার্শ্ববর্তী শ্রীলংকা, আফগানিস্তান তো সংস্কৃতিতে ও খাদ্যে প্রায় কাছাকাছি। আমরা কি তাদের মতোও হতে পারি না?

 

আমরা কি হার্দিক পান্ডিয়া, স্যামসন, রোহিত শর্মা, ইশান কিশান, জাজাই, ব্যাটিংয়ের রশিদ খান, নাজিবুল্লাহ যাদরান, শানাকা, কুশাল পেরেরা, ফখর জামান, রিজোয়ান, আসিফ আলী, সাদাব খান, অক্সর প্যাটেলও হতে পারি না? আমরা তো তাদের মতো হতে পারি, কিন্তু আমরা এই বাস্তবতাকে পাশ কাটিয়ে টি২০ ক্রিকেটের কথা আসলেই রাসেল-পোলার্ডদের টেনে এনে কি শাক দিয়ে মাছ ঢাকা নয়?

 

পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ইমরান নাজিরের দিকেই তাকান না। লিকলিকে গড়নের একটা ছেলে। শরীর কিচ্ছু নেই, কিন্তু যা ছিলো পুরাটাই কলিজা।

 

৭০/৮০ মিটারের বাউন্ডারীতে ছয় হাঁকাতে তো রাসেল-পোলার্ড হতে হয় না, শক্তির হিসেবে ১৬/১৭ বছর বয়সী ছেলের গায়েও ঐ শক্তি থাকে। যেটা বেশি দরকার সেটা হলো ইচ্ছা অর্থাৎ মেরে খেলার মানসিকতা, যেখানেই সমস্যা বাংলাদেশীদের।

যদি সবাইকে রাসেল-পোলার্ড  হতো, তাহলে হার্দিক, স্যামসন, সূর্যকুমার, রোহিত, আসিফ আলীরাও টি২০ খেলতে পারতো না।

স্বয়ং বাংলাদেশেই তো আছে দূর্দান্ত উদাহরণ। ১৯ বিশ্বকাপ জেতা পারভেজ হোসাইন ইমনই তো মাত্র ৪২ বলে শতক করেছে দেশে। একটা পিচ্চি ছেলের এমন ব্যাটিংয়েই তো বড় প্রমাণ যে মেরে খেলতে রাসেল-পোলার্ড হতে হয় না। সব বাউন্ডারীতে জোর লাগে না। রাসেল-পোলার্ডদের ভালো ইনিংসের দিকে খেয়াল করলে দেখা যাবে যে, তারা বাজে বলের অপেক্ষা করে, ভালো বলে হিট করে। কিন্তু বাজে বল পেলেই ছয় হাকাতে চেষ্টা করে। হয়তো তাদের ছয়গুলো বেশি বড় হয়। 

 

যতদিন না দলগত ভাবে সিদ্ধান্ত না আসে যে, আমরা ২০০ করার জন্যই খেলবো এবং যতদিন না একজন প্লেয়ার ঐ মানসিকতা তৈরী না করে যে, আজ আমি ২০ বল মোকাবেলা করলেও ৩০+ রান করবো। ততদিন পর্যন্ত ভালো করা সম্ভব না।

 

অবশ্য আরেকটা বড় সমস্যাই রয়ে যাচ্ছে, তাহলো উইকেট। যতদিন না দেশের প্রত্যেকটি টি২০ উইকেট ব্যাটিং সহায়ক না করা হয়, ততদিন ক্রিকেটারদের টি২০ মানসিকতা জীবনেও আসবে না। কারন বাংলাদেশ দল টি২০ ক্রিকেটে ২০০ রানের বেশিও নিয়েছে এবং ব্যক্তিগত ভাবে অনেক ক্রিকেটারই ঝড়ো ইনিংস খেলেছে এবং এগুলো অবশ্যই ভালো উইকেটে। মিরপুরের বিষাক্ত উইকেটে নয়।

দেশে ভালো খেলার অভ্যাস গড়তে পারলেই বিদেশেও সফলতা সম্ভব, তার আগে নয়।

আশার কথা, আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজে পুরো দলকে স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। টি২০ সিরিজের ফলাফল যাই হোক, ক্রিকেটারদের ইতিবাচক খেলতে বলা হয়েছে। আশা করি এই সাহস/নির্ভরতার ইতিবাচক রেজাল্ট আসবে, সেটা ম্যাচের ফলাফলে এবং ক্রিকেটারদের ভয়ডরহীন খেলার মানসিকতায়।

 

জুবায়ের আহমেদ

লেখক ও ক্রীড়া বিশ্লেষক

শেয়ার করুন

২০২২ © ডেইলি কালের ধব্বনি কর্তৃক সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত।
Design & Developed by Marshal Host 
akun pro jepang
akun pro rusia
akun pro thailand
akun pro kamboja
akun pro china
akun pro taiwan
akun pro hongkong
akun pro myanmar
akun pro vietnam
akun pro malaysia
link server internasional
link server internasional
link server internasional
pg soft
link server internasional
link server sensasional
pg soft
link server internasional
link server sensasional
pg slot